পুরুষদের শুক্রাণু কমে যাওয়ার কারণ এবং কিভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায়
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই। আমরা প্রতিনিয়ত আপনাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের উপকার মূলক পোস্ট নিয়ে হাজির হওয়ার চেষ্টা করি। আজও তার ব্যতিক্রম নয়। বন্ধুরা, আজ আমরা আলোচনা করব পুরুষদের শুক্রাণু কমে যাওয়ার কারণ এবং কিভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে শুক্রাণু সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায়। পুরুষদের বীর্য ঘাটতি থাকলে যৌনজীবনে সুখ ব্যাহত হওয়ার সাথে সাথে সন্তান উৎপাদনেও সমস্যা তৈরি হয়। তবে এই সমস্যা প্রাকৃতিকভাবে সহজেই দূর করা যায়।
বন্ধুরা, অপর্যাপ্ত শুক্রাণু উৎপাদন ও গুণগত মান পুরুষ বন্ধ্যাত্বের অন্যতম সাধারণ কারণ। প্রায় ১৫ শতাংশ দম্পতি এই সমস্যা অনুভব করেছেন এবং ধীরে ধীরে এর পরিমাণ বাড়ছে।
পুরুষদের শুক্রাণু কমে যাওয়ার কারণ :
কখনও কখনও অভ্যন্তরিক কারণ, যেমন ভ্যারিকোসেলে, শুক্রাণুর সংখ্যা কম করে দিতে পারে। কিন্তু ধুমপান, নেশা জাতীয় দ্রব্যের সেবন, খারাপ ভোেজন এবং নিয়মিত ব্যায়াম না করা ইত্যাদির কারণে শুক্রানুর সংখ্যা কমে যেতে পারে। কিছু বহিরাগত কারণ যা আপনার শুক্রানুর সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারে
• কম শুক্রানু উৎপাদনের ক্ষেত্রে গরমের ক্ষতিকারক প্রভাব থাকে। ঘন ঘন গরম জলে স্নান করা বা ট্যাব ব্যবহার করা, দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা, টাইট আন্ডারওয়্যার, স্থূলতা ইত্যাদি অণ্ডকোষে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে।
• অত্যধিক ধূমপান ও মদ্যপান করলে শুক্রাণুর সংখ্যাও কমতে পারে।
• হরমোনের ভারসাম্যের উপর চিন্তা একটি বৃহত্তর প্রভাব ফেলে যা শুক্রাণু উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে।
• অত্যাধিক সোয়া জাতীয় খাবারে (সোয়া দুধ, সোয়া বার্গার ইত্যাদি) আইসোফ্লাবা কেন্দ্রভূত হয়,টেসটোস্টেরনের জন্য প্রয়োজনীয় ইস্ট্রোজেন রিসেপটর সাইটগুলিকে ফাইটোইস্ট্রোজেন ব্লক করে।
আরো পড়ুনঃ স্বপ্নদোষ হওয়ার কারণ কি - স্বপ্নদোষ না হওয়ার কারণ
প্রাকৃতিকভাবে পুরুষদের শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় :
কলা: অতি পরিচিত ও সহজলভ্য এই ফলটি বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। কলাতে বোমেনাইল নামের বিশেষ এক ধরনের উৎসেচক রয়েছে। এটি যৌন উদ্দীপক হরমোনগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে।
তৈলাক্ত মাছ: তৈলাক্ত মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এটি বীর্যের গুণ বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষনায় দেখা গেছে, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত মাছ খেলে বীর্যের গুণ ও পরিমাণ দুই-ই বাড়ে। তাছাড়া এটি মস্তিষ্কে যৌন উদ্দীপনার অনুভুতি জাগিয়ে তোলে।
ফল ও শাকসবজি: বেরি, পালং শাক, ব্রকোলি - এগুলোতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শুক্রাণুর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
বাদাম ও বীজ: আখরোট, কুমড়ার বীজ - এগুলোতে অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা শুক্রাণু উৎপাদনে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ শুক্রাণু কি দিয়ে তৈরি - শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে
চর্বিহীন প্রোটিন: স্যামন, মুরগি - এই খাবারগুলো সামগ্রিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শুক্রাণুর স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।
জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার: ঝিনুক, কুমড়ার বীজ, মসুর ডাল - জিঙ্ক টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ডার্ক চকোলেট: এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা যৌন উদ্দীপনা বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও ডার্ক চকোলেটে আছে এল-আর্জিনিন এইচসিএল ও অ্যামিনো অ্যাসিড। এই উপাদানগুলো বীর্যের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়।
রসুন: রসুনে সেলেনিয়াম নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা বীর্যের সক্রিয়তা বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও রসুনে রয়েছে আলিকিন, যা যৌনাঙ্গে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে। একইসঙ্গে বীর্যের পরিমাণও বাড়ায়।
লেবুজাতীয় ফল: লেবুজাতীয় ফলে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি থাকে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পুরুষের বীর্যের মান উন্নত করে। লেবু, আঙ্গুরের রস এই সমস্যায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অশ্বগন্ধা: অশ্বগন্ধা শুক্রানুর সংখ্যা, বীর্য এবং শুক্রানুর গতিশীলতাকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। অশ্বগন্ধা সম্পূর্ণ হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য অন্তঃস্রাবী প্রণালিকে সমর্থন করে। এটি আপনার সমগ্র শরীরকে সুস্থ রাখে, জীবন শক্তিকে বৃদ্ধি করে এবং চিন্তাকে কম করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ বাচ্চা না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন
নিয়মিত ব্যায়াম: মোটা হলে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
পর্যাপ্ত ঘুম: শরীরের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াগুলো সঠিকভাবে চলার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি।
ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার: ধূমপান ও মদ্যপান শুক্রাণুর সংখ্যাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তামাক পরিহার: তামাক শরীরের জন্য ক্ষতিকর এবং শুক্রাণুর স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো নয়।
পর্যাপ্ত পানি পান: শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ প্রতিদিন বাদাম খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, যদি সমস্যা বেশি থাকে, তাহলে আপনাকে অবশ্যই একজন ভাল চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সবার সুস্থতার কামনা করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। সবাইকে ধন্যবাদ।