শ্রীকৃষ্ণের প্রণাম মন্ত্র ও অষ্টোত্তর শতনামঃ
হরে কৃষ্ণ 🙏 বন্ধুরা, ভগবানের বিশেষ কৃপা পেতে আমাদের প্রতিদিন শ্রীকৃষ্ণের প্রণাম মন্ত্র ও অষ্টোত্তর শতনাম পাঠ করা উচিত। বিশেষ করে একাদশী তিথিতে অবশ্যই পাঠ করতে ভুলবেন না শ্রীকৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম।আসুন আজ আমরা সবাই মিলে পাঠ করি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রণাম মন্ত্র ও অষ্টোত্তর শতনাম।
শ্রীকৃষ্ণের প্রণাম মন্ত্র :
কৃষ্ণায় বাসুদেবায় দৈবকী নন্দনায় চ।
অশেষ ক্লেশনাশায় গোবিন্দায় নমো নমঃ।।
হে কৃষ্ণ করুণাসিন্ধো দীনবন্ধু জগত্পতে।
গোপেশ গোপীকাকান্ত রাধাকান্ত নমোহস্তু তে।।
আরো পড়ুনঃ নিয়ম মেনে নিয়ন্ত্রণ করুন আপনার উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল
শ্রীকৃষ্ণের অষ্টোত্তর-শতনাম :
জয় জয় গোবিন্দ গোপাল গদাধর।
কৃষ্ণচন্দ্র কর দয়া করুণাসাগর।।
জয় রাধে গোবিন্দ গোপাল বনমালী।
শ্রীরাধার প্রাণধন মুকন্দ মুরারি।
হরিনাম বিনে রে গোবিন্দ নাম বিনে।
বিফলে মনুষ্য জন্ম যায় দিনে দিনে।
দিন গেল মিছে কাজে রাত্রি গেল নিদ্রে।
না ভজিনু রাধাকৃষ্ণ চরণার বিন্দে।
কৃষ্ণ ভজিবার তরে সংসারে আইনু।
মিছে মায়ায় বন্ধ হ'য়ে বৃক্ষসম হৈনু।
ফলরূপে পুত্র কন্যা ডাল ভাঙ্গি পড়ে।
কালরূপে সংসারেতে পক্ষী বাসা করে।
যখন কৃষ্ণ জন্ম নিল দৈবকী উদরে।
মথুরাতে দেবগণ পুষ্পবৃষ্টি করে।
বসুদেব রাখি এলো নন্দের মন্দিরে।
নন্দের আলয়ে কৃষ্ণ দিনে দিনে রাড়ে।
শ্রীনন্দ রখিল নাম নন্দের নন্দন।। ১
যশোদা রাখিল নাম যাদু বাছাধন।। ২
উপানন্দ নাম রাখে সুন্দর গোপাল।। ৩
ব্রজবালক নাম রাখে ঠাকুর রাখাল।। ৪
সুবল রাখিল নাম ঠাকুর কানাই। ৫
শ্রীদাম রাখিল নাম রাখাল রাজা ভাই।। ৬
ননীচোরা নাম রাখে যতেক গোপিনী। ৭
কালসোনা নাম রাখে রাধা-বিনোদিনী।। ৮
কুজ্বা রাখিল নাম পতিত-পাবন হরি। ৯
চন্দ্রাবলী নাম রাখে মোহন বংশীধারী।। ১০
অনন্ত রাখিল নাম অন্ত না পাইয়া। ১১
কৃষ্ণ নাম রাখেন গর্গ ধ্যানেতে জানিয়া।। ১২
কৰমুনি নাম রাখে দেব চক্রপাণী। ১৩
বনমালী নাম রাখে বনের হরিণী।। ১৪
গজহস্তী নাম রাখে শ্রীমধুসূদন। ১৫
অজামিল নাম রাখে দেব নারায়ণ।। ১৬
পুরন্দর নাম রাখে দেব শ্রীগোবিন্দ। ১৭
দ্রৌপদী রাখিল নাম দেব দীনবন্ধু।। ১৮
সুদাম রাখিল নাম দারিদ্র-ভঞ্জন। ১৯
ব্রজবাসী নাম রাখে ব্রজের জীবন।। ২০
দর্পহারী নাম রাখে অর্জুন সুধীর। ২১
পশুপতি নাম রাখে গরুড় মহাবীর।। ২২
যুধিষ্ঠির নাম রাখে দেব যদুবর। ২৩
বিদুর রাখিল নাম কাঙ্গাল ঈশ্বর।। ২৪
বাসুকি রাখিল নাম দেব-সৃষ্টি স্থিতি। ২৫
ধ্রুবলোকে নাম রাখে ধ্রুবের সারথি।। ২৬
নারদ রাখিল নাম ভক্ত প্রাণধন। ২৭
ভীষ্মদেব নাম রাখে লক্ষ্মী-নারায়ণ।। ২৮
সত্যভামা নাম রাখে সত্যের সারথি। ২৯
জাম্বুবতী নাম রাখে দেব যোদ্ধাপতি।। ৩০
বিশ্বামিত্র নাম রাখে সংসারের সার। ৩১
অহল্যা রাখিল নাম পাষাণ-উদ্ধার।। ৩২
ভৃগুমুনি নাম রাখে জগতের হরি। ৩৩
পঞ্চমুখে রাম নাম গান ত্রিপুরারি।। ৩৪
কুঞ্জকেশী নাম রাখে বলী সদাচারী। ৩৫
প্রহ্লাদ রাখিল নাম নৃসিংহ-মুরারী।। ৩৬
বশিষ্ঠ রাখিল নাম মুনি-মনোহর। ৩৭
বিশ্বাবসু নাম রাখে নব জলধর।। ৩৮
সম্বর্ত্তক নাম রাখে গোবর্দ্ধনধারী। ৩৯
প্রাণপতি নাম রাখে যত ব্রজনারী।। ৪০
অদিতি রাখিল নাম অরাতি-সুদন। ৪১
গদাধর নাম রাখে যমল-অর্জুন।। ৪২
মহাযোদ্ধা নাম রাখে ভীম মহাবল। ৪৩
দয়ানিধি নাম রাখে দরিদ্র সকল।। ৪৪
বৃন্দাবন-চন্দ্র নাম রাখে বিন্দাদূতি। ৪৫
বিরজা রাখিল নাম যমুনার পতি।। ৪৬
বাণীপতি নাম রাখে গুরু বৃহস্পতি। ৪৭
লক্ষ্মীপতি নাম রাখে সুমন্ত্র সারথি।। ৪৮
সন্দীপনি নাম রাখে দেব অন্তর্যামী। ৪৯
পরাশর নাম রাখে ত্রিলোকের স্বামী।। ৫০
পদ্মযোনী নাম রাখে অনাদির আদি। ৫১
নট-নারায়ণ নাম রাখিল সম্বাদি।। ৫২
হরেকৃষ্ণ নাম রাখে প্রিয় বলরাম। ৫৩
ললিতা রাখিল নাম বাদল-শ্যাম।। ৫৪
বিশাখা রাখিল নাম অনঙ্গমোহন। ৫৫
সুচিত্রা রাখিল নাম শ্রীবংশীবদন।। ৫৬
আয়ান রাখিল নাম ক্রোধ-নিবারণ। ৫৭
চণ্ডকেশী নাম রাখে কৃতান্ত-শাসন।। ৫৮
জ্যোতিষ্ক রাখিল নাম নীলকান্তমণি। ৫৯
গোপীকান্ত নাম রাখে সুদাম ঘরণী।। ৬০
ভক্তগণ নাম রাখে দেব জগন্নাথ। ৬১
দুর্বাসা নাম রাখে অনাথের নাথ।। ৬২
রাসেশ্বর নাম রাখে যতেক মালিনী। ৬৩
সর্বযজ্ঞেশ্বর নাম রাখেন শিবানী।। ৬৪
উদ্ধব রাখিল নাম মিত্র-হিতকারী। ৬৫
অক্রুর রাখিল নাম ভব-ভয়হারী।। ৬৬
গুঞ্জমালী নাম রাখে নীল-পীতবাস। ৬৭
সর্ববেত্তা নাম রাখে দ্বৈপায়ণ ব্যাস।। ৬৮
অষ্টসখী নাম রাখে ব্রজের ঈশ্বর। ৬৯
সুরলোকে নাম রাখে অখিলের সার।। ৭০
বৃষভানু নাম রাখে পরম ঈশ্বর। ৭১
স্বর্গবাসী নাম রাখে সর্ব পরাৎপর।। ৭২
পুলোমা রাখেন নাম অনাথের সখা। ৭৩
রসসিন্ধু নাম রাখে সখী চিত্রলেখা।। ৭৪
চিত্ররথ নাম রাখে অরাতি দমন। ৭৫
পুলস্ত্য রাখিল নাম নয়ন-রঞ্জন।। ৭৬
কশ্যপ রাখেন নাম রাস-রাসেশ্বর। ৭৭
ভাণ্ডারীক নাম রাখে পূর্ণ শশধর।। ৭৮
সুমালী রাখিল নাম পুরুষ প্রধান। ৭৯
পুরঞ্জন নাম রাখে ভক্তগণ প্রাণ।। ৮০
রজকিনী নাম রাখে নন্দের দুলাল। ৮১
আহলাদিনী নাম রাখে ব্রজের গোপাল।। ৮২
দেবকী রাখিল নাম নয়নের মণি। ৮৩
জ্যোতির্ময় নাম রাখে যাজ্ঞবল্ক্য মুনি।। ৮৪
অত্রিমুনি নাম রাখে কোটি চন্দ্রেশ্বর। ৮৫
গৌতম রাখিল নাম দেব বিশ্বম্ভর।। ৮৬
মরীচি রাখিল নাম অচিন্ত্য-অচ্যুত। ৮৭
জ্ঞানাতীত নাম রাখে শৌনকাদিসুখ।। ৮৮
রুদ্রগণ নাম রাখে দেব মহাকাল। ৮৯
সুরগণ নাম রাখে ঠাকুর দয়াল।। ৯০
সিদ্ধগণ নাম রাখে পুতনা-নাশন। ৯১
সিদ্ধার্থ রাখিল নাম কপিল তপোধন।। ৯২
ভাদুরি রাখিল নাম অগতির গতি। ৯৩
মৎস্যগন্ধা নাম রাখে ত্রিলোকেরপতি।। ৯৪
শুক্রাচার্য্য নাম রাখে অখিল বান্ধব। ৯৫
বিষ্ণুলোকে নাম রাখে দেব শ্রীমাধব।। ৯৬
যদুগণ নাম রাখে যদুকুলপতি। ৯৭
অশ্বিনীকুমার নাম রাখে সৃষ্টি-স্থিতি।। ৯৮
অর্য্যমা রাখিল নাম কাল-নিবারণ। ৯৯
সত্যবতী নাম রাখে অজ্ঞান-নাশন।। ১০০
পদ্মাক্ষ রাখিল নাম ভ্রমরী-ভ্রমর। ১০১
ত্রিভঙ্গ রাখিল নাম যত সহচরী।। ১০২
বংকচন্দ্র নাম রাখে শ্রীরূপমঞ্জরী। ১০৩
মাধুরা রাখিল নাম গোপী-মনোহারী।। ১০৪
মঞ্জুমালী নাম রাখে অভীষ্টপুরণ। ১০৫
কুটিলা রাখিল নাম মদনমোহন।। ১০৬
মঞ্জরী রাখিল নাম কর্মব্রহ্ম-নাশ। ১০৭
ব্রজব নাম রাখে পূর্ণ অভিলাস।। ১০৮
দৈত্যারি দ্বারিকানাথ দারিদ্র-ভঞ্জন।
দয়াময় দ্রৌপদীর লজ্জা-নিবারণ।।
স্বরূপে সবার হয় গোলকেতে স্থিতি।
বৈকুন্ঠে ক্ষীরোদশারী কমলার পতি।।
রসময় রসিক নাগর অনুপম।
নিকুঞ্জবিহারী হরি নবঘনশ্যাম।।
শালগ্রাম দামোদর শ্রীপতি শ্রীধর।
তারকব্রহ্ম সনাতন পরম ঈশ্বর।।
কল্পতরু কমললোচন হৃষীকেশ।
পতিত-পাবন গুরু জ্ঞান-উপদেশ
চিন্তামণি চতুর্ভুজ দেব চক্রপণি।'
দীনবন্ধু দেবকী নন্দন যদুমণি।।
অনন্ত কৃষ্ণের নাম অনন্ত মহিমা।
নারদাদি ব্যাসদেব দিতে নারে সীমা।।
নাম ভজ নাম চিন্ত নাম কর সার।
অনন্ত কৃষ্ণের নাম মহিমা অপার।।
শততার সুবর্ণ গো কোটি কন্যাদান।
তথাপি না হয় কৃষ্ণ নামের সমান।।
যেই নাম সেই কৃষ্ণ ভজ নিষ্ঠা করি।
নামের সহিত আছে আপনি শ্রীহরি।।
শুন শুন ওরে ভাই নাম সংকীর্তন।
যে নাম শ্রবনে হয় পাপ বিমোচন।।
কৃষ্ণনাম হরিনাম বড়ই মধুর।
যেই জন কৃষ্ণ ভজে সে বড় চতুর।।
ব্রহ্ম-আদি দেব যাঁরে ধ্যানে নাহি পায়।
সে ধন বঞ্চিত হলে কি হবে উপায়।।
হিরণ্যকশিপুর উদর-বিদরণ।
প্রহলাদে করিল রক্ষা দেব নারায়ণ।।
বলীরে ছলীতে প্রভু হইলা বামন।
দ্রৌপদীর লজ্জা হরি কৈলা নিবারণ।।
অষ্টোত্তর শতনাম যে করে পঠন।
অনায়াসে পায়, রাধা কৃষ্ণের চরণ।।
ভক্তবাঞ্ছা পূর্ণকারী নন্দের নন্দন।
মথুরায় কংস-ধ্বংস লঙ্কায় রাবণ।।
বকাসুর বধ আদি কালীয়-ডামন।
নরোত্তম কহে এই নাম সংকীর্তন।।
আরো পড়ুনঃ আপনার তারুণ্যকে ধরে রাখুন সহজ কিছু উপায়ে
শ্রী কৃষ্ণের নাম-সংকীর্ত্তন -
দৈত্যারি দ্বারিকানাথ দারিদ্র-ভঞ্জন।
দয়াময় দ্রৌপদীর লজ্জা-নিবারণ।।
স্বরূপে সবার হয় গোলকেতে স্থিতি।
বৈকুন্ঠে ক্ষীরোদশারী কমলার পতি।।
রসময় রসিক নাগর অনুপম।
নিকুঞ্জবিহারী হরি নবঘনশ্যাম।।
শালগ্রাম দামোদর শ্রীপতি শ্রীধর।
তারকব্রহ্ম সনাতন পরম ঈশ্বর।।
কল্পতরু কমললোচন হৃষীকেশ।
পতিত-পাবন গুরু জ্ঞান-উপদেশ।।
চিন্তামণি চতুর্ভুজ দেব চক্রপাণি।
দীনবন্ধু দেবকী নন্দন যাদুমনি।।
অনন্ত কৃষ্ণের নাম অনন্ত মহিমা।
নারদাদি ব্যাসদেব দিতে নারে সীমা।।
নাম ভজ নাম চিন্ত নাম কর সার।
অনন্ত কৃষ্ণের নাম মহিমা অপার।।
শতভার সুবর্ণ গো কোটি কন্যাদান।
তথাপি না হয় কৃষ্ণ নামের সমান।।
যেই নাম সেই কৃষ্ণ ভজ নিষ্ঠা করি।
নামের সহিত আছে আপনি শ্রীহরি।।
শুন শুন ওরে ভাই নাম সংকীর্তন।
যে নাম শ্রবণে হয় পাপ বিমোচন।।
কৃষ্ণনাম হরিনাম বড়ই মধুর।
যেই জন কৃষ্ণ ভজে সে বড় চতুর।।
ব্রহ্ম-আদি দেব যারেঁ ধ্যানে নাহি পায়।
সে ধন বঞ্চিত হলে কি হবে উপায়।।
হিরণ্যকশিপুর উদর-বিদরণ।
প্রহ্লাদে করিল রক্ষা দেব নারায়ণ।।
বলীরে ছলীতে প্রভু হইলা বামন।
দ্রৌপদীর লজ্জা হরি কৈলা নিবারণ।।
অষ্টোত্তর শতনাম যে করে পঠন।
অনায়াসে পায় রাধা কৃষ্ণের চরণ।।
ভক্তবাঞ্ছা পূর্ণকারী নন্দের নন্দন।
মথুরায় কংস-ধ্বংস লঙ্কায় রাবণ।।
বকাসুর বধ আদি কালীয়-দমন।
সরোত্তম কহে এই নাম সংকীর্ত্তণ।
আরো পড়ুনঃ রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেলে কি কি লক্ষণ দেখা দেবে
চৌত্রিশ পদাবলী -
ক, কলিযুগে শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য অবতার।
খ, খেলিবার প্রবন্ধে কৈল খোল করতাল।।
গ, গড়াগডি যান প্রভু নিজ সংকীর্ত্তনে।
ঘ, ঘরে ঘরে হরিনাম দেন সর্ব্বজনে।।
ঙ, উচ্চৈঃস্বরে কান্দে প্রভু জীবের লাগিয়া।
চ, চেতন করান জীবে কৃষ্ণ-নাম দিয়া।।
ছ, ছল ছল করে আঁখি নেত্রে-জল ঝরে।।
জ, জগত্ পবিত্র কৈলা গৌর কলেবরে।
ঝ, ঝলমল মুখ য়ারঁ পূর্ণ শশধর।
ঞ, এমত না দেখি আর দয়ার সাগর।
ট, টলমল করে গোরা ভাবেতে বিহ্বল।
ঠ, ঠমকে ঠমকে যায় বলে হরিবোল।।
ড, ডোরহি কৌপন ক্ষণ কটির উপরে।।
ঢ, ঢলিয়া ঢলিয়া পড়ে গদাধর-ক্রোড়ে।।
ণ, আন্ পরসঙ্গ গোরা না শুনে শ্রবণে।
ত, তান মান গান রসে মজাইয়া মনে।
থ, স্থির নাহি রয় প্রভুর নয়নের জল।
দ, দীনহীন জনেরে ধরিয়া দেন কোল।।
ধ, ধোয়াইয়া পূরব পিরীত পরসঙ্গ।।
ন, না জানি কাহার ভাবে হইলা ত্রিভঙ্গ।।
প, প্রেমরসে ভাসাইলা অখিল সংসার।।
ফ, ফুটিল শ্রীবৃন্দাবন সুরধুনী ধার।
ব, ব্রহ্মা মহেশ্বর ধ্যানে করে অন্বেষণ।।
ভ, ভাবিয়া না পান যারে সহস্র-বদন।
ম, মত্ত মাতঙ্গ গতি মধুর মন্দ হাস।
য, যশোমতী মাতা যার ভুবনে প্রকাশ।।
র, রতিপতি সম রূপ অতি মনোরম।।
ল, লীলা লাবণ্য যার অতি অনুপম।
ব, বসুদেব সুত সেই শ্রীনন্দ-নন্দন।
শ, শচীর নন্দন এবে বলে সর্ব্বজন।
ষ, ষড়ভূজ-রূপ হৈলা অত্যাশ্চর্য্যময়।
স, সবাকার প্রাণধন গোরা রসময়।
হ, হরি হরি বল ভাই, কর নাম মহাযজ্ঞ।
ক্ষ, ক্ষিতিতলে জন্মি কেহ না হও অবিজ্ঞ।।
চৌত্রিশ পদাবলী যে করহে কীর্ত্তন।
দাস নরোত্তম মাগে তাঁহার চরণ।।
আরো পড়ুনঃ সুস্থ রাখতে প্রতিদিন খালি পেটে পান করুন ১ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি
শুক-শারীর দ্বন্দ্ব -
বৃন্দাবন-বিলাসিনী রাই আমাদের।
রাই আমাদের, রাই আমাদের,
আমরা রাইয়ের, রাই আমাদের।
শুক বলে আমার কৃষ্ণ মদনমোহন।
শারী বলে আমার রাধা বামে যতক্ষণ,
নৈলে শুধুই মদন।
শুক বলে আমার কৃষ্ণ গিরি ধরেছিল।
শারী বলে আমার রাধা শক্তি সঞ্চারিল,
নৈলে পারবে কেন।
শুক বলে আমার কৃষ্ণের মাথায় ময়ূর-পাখা।
শারী বলে আমার রাধার নামটি তাতে লেখা,
ঐ যে যায় গো দেখা।
শুক বলে আমার কৃষ্ণের চূড়া বামে হেলে।
শারী বলে আমার রাধার চরণ পাবে বলে,
চূড়া তাইতো হেলে।।
শুক বলে আমার কৃষ্ণ যশোদার জীবন।
শারী বলে আমার রাধা জীবনের জীবন।।
নৈলে শূন্য জীবন।
শুক বলে আমার কৃষ্ণ জগত্ চিন্তামণি।
শারী বলে আমার রাধা প্রেম প্রদায়িনী
সে তোমার কৃষ্ণ জানে।।
শুক বলে আমার কৃষ্ণের বাঁশী করে গান।।
শারী বলে সত্য বটে, বলে রাধার নাম।
নৈলে, মিছাই গান।।
শুক বলে আমার কৃষ্ণ জগতের গুরু।
শারী বলে আমার রাধা বাঞ্ছাকল্পতরু,
নৈলে কে কার গুরু।
শুক বলে আমার কৃষ্ণ প্রেমের ভিখারী।
শারী বলে আমার রাধা প্রেমের লহরী,
প্রেমের ঢেউ কিশোরী।।
শুক বলে আমার কৃষ্ণের কদমতলায় থানা।
শারী বলে আমার রাধা করে আনাগোনা,
নৈলে যেত না জানা।।
শুক বলে আমার কৃষ্ণ জগতের কালো।
শারী বলে আমার রাধার রূপে জগত আলো,
নৈলে আঁধার কালো।।
শুক বলে আমার কৃষ্ণের শ্রীরাধিকা দাসী।।
শারী বলে সত্য বটে, সাক্ষী আছে বাঁশী,
নৈলে হতো কাশীবাসী।।
শুক বলে আমার কৃষ্ণ জগতজীবন।
শারী বলে আমার রাধা মধুর পবন,
নৈলে থাকে কি জীবন।।
শুক বলে আমার কৃষ্ণ জগতের প্রাণ।
শারী বলে আমার রাধা জীবন করে দান,
নৈলে বাঁচে কি প্রাণ।
শুক-শারী দুজনার দ্বন্দ্ব ঘুচে গেল।
প্রেমভরে সবে মিলে একবার হরি হরি বল,
শ্রীবৃন্দাবনে চল।।
--শুক-শারীর দ্বন্দ্ব সমাপ্ত--
আরো পড়ুনঃ জেনে নিন লবঙ্গর কিছু অসাধারণ গুনাগুন ও তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
শ্রীশ্রীরাধিকার বারমাসী -
জয় শ্রীচৈতন্য জয় প্রভু নিত্যানন্দ।
জয়অদ্বৈতাচন্দ্র জয় শ্রীরাধা গোবিন্দ।।
মাঘেতে মাধব কৈল মথুরায় গমন।
দশদিক শূন্য হেরি নব বৃন্দাবন।।
ফাগুনে দ্বিগুন দুঃখ চিত্তে উঠে রোল।
গোকুলে গোবিন্দ নাই কে করিবে দোল।।
চৈত্রেতে চাতকী পক্ষী নিকুঞ্জ কুটীরে।
প্রিয় প্রিয় রব করে, ডাকে উচ্চৈঃস্বরে।।
বৈশাখে বিদেশে গেছে, প্রিয় গুণমন্ত।
সে অবধি রাধিকার দুঃখের নাই অন্ত।।
জ্যৈষ্ঠে যমুনার জলে খেলিত বনমালী।
শ্যাম-অঙ্গে দিতাম বারির অঞ্জলি।।
আষাঢ়ে নবীন মেঘ, ভ্রমর গুঞ্জরে।
তা' হেরি শ্রীরাধিকার কৃষ্ণ মনে পড়ে।।
শ্রাবণে সকলে মোরা, লয়ে প্রিয় সাথী।
নিকুঞ্জে বসিয়া হার গাঁথিতাম মালতী।।
ভাদরে ভরা নদী, দুকূল পাথার।
কেমনে হইব পার, না জানি সাঁতার।।
আশ্বিনে অম্বিকা পূজা করে জগজ্জনে।
অবশ্য আসিবে প্রিয়, অষ্টমীর ক্ষণে।।
কার্ত্তিকে করিল হরি, কালীয় দমন।
নানা জাতি পুষ্প ফুটে, অঙ্গের ভূষণ।।
অঘ্রাণে শুনেছি সখি, অপরূপ কথা।
অক্রুর ধরিছে শিরে, নবদন্ড ছাতা।।
পৌষেতে পত্র লিখি, দিলাম সখীর হাতে।
কে যাইবে মথুরায়, লোক নাই সাথে।।
শ্রীরাধিকার বারমাসী সমাপন হ'ল।
ভক্তগণ প্রেমানন্দে হরি হরি বল।।
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আশা করি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। রাধে রাধে 🙏