আপনার ফেসবুক একাউন্ট নিরাপদে রাখতে এই ৬ টি উপায় অবশ্যই মেনে চলুন
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, জাকারবার্গ সাহেবের আবিষ্কৃত ফেসবুকের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তরুণ থেকে বৃদ্ধ সবারই পছন্দ এই ফেসবুক। এটা এখন আমাদের জীবনের সাথে এতটাই অতপ্রতভাবে জড়িয়ে পড়েছে যে, আমরা প্রতিদিন কি করছি, কি খাচ্ছি, কোথায় যাচ্ছি, কার সাথে যাচ্ছিস, বিভিন্ন ছবি- ভিডিও, এমনকি প্রিয়জনের সাথে মান অভিমানের গল্পও বাদ দেই না ফেসবুকে পোস্ট করতে। এতকিছুর মাঝে আমরা একবারও নিজেদের নিরাপত্তা বা বিপদের কথা চিন্তা করিনা। আমরা ভুলে যাই হ্যাকারদের অত্যাচারে আমাদের কোথাও নিরাপত্তা নেই। ব্যাংক একাউন্ট থেকে শুরু করে ফেসবুক একাউন্ট সবকিছুই এখন ঝুঁকির মুখে। তবে বন্ধুরা, ফেসবুকে ব্যক্তিগত তথ্যসহ অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার জন্য কিছু উপায় রয়েছে, যেগুলো আমাদের সবার অবশ্যই মেনে চলা উচিত।
বন্ধুরা, আজ আমরা আপনাদের জানাবো মাত্র ৬ টি উপায় অবলম্বন করে বিপদ থেকে
কিভাবে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি নিরাপদে রাখবেন। আসুন তাহলে জেনে নেই -
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন :
আমরা সাধারণত আমাদের মনে রাখার সুবিধার্থে ফেসবুকে সহজ পাসওয়ার্ড দিয়ে
থাকি কিন্তু এটা কখনোই করা যাবে না। আপনার একাউন্টকে নিরাপদ রাখতে সবার আগে যেটি দরকার
তা হল একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড। যাতে কোন ব্যক্তি রুট ফোর্স আক্রমণ করে আপনার একাউন্টে
ঢুকে সহজেই কোন তথ্য খুঁজে বের করতে বা চুরি করতে না পারে। মনে রাখবেন আপনার পাসওয়ার্ডটি
যেন ক্যারেক্টার, সংখ্যা এবং আলফাবেট দিয়ে তৈরি জটিল পাসওয়ার্ড হয়।
টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু রাখুন :
টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন হল একটি সিকিউরিটি লেয়ার। মূলত হ্যাকারদের উপদ্রব থেকে
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বাঁচাতে এই সিস্টেমটি চালু করেন ফেসবুক। এই সিস্টেম চালু থাকলে
আপনি যখন আপনার ফেসবুক একাউন্টে লগইন করতে যাবেন তখন আপনার ফেসবুক একাউন্ট থেকে আপনার
ফোনে একটি sms পাঠানো হবে, সেখানে একটি কোড নাম্বার থাকবে। যেটাকে বলা হয় ওয়ান টাইম
পাসওয়ার্ড (OTP)। সেই কোড নাম্বার দিয়ে আপনাকে লগইন করতে হবে। টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের একাউন্টের নিরাপত্তা দ্বিগুণ করেছে। এখন যদি কেউ আপনার ফেসবুকের
পাসওয়ার্ড পেয়েও যায় তাহলেও আপনার ফেসবুক একাউন্টে ঢুকতে পারবে না।
টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করার নিয়ম -
★ প্রথমে আপনার ফেসবুক
একাউন্টে প্রবেশ করুন এবং মেনুতে ক্লিক করুন।
★ এবার Settings
& Privacy থেকে Settings এ ক্লিক করুন।
★ Password And
Security তে প্রবেশ করুন।
★ Use Two-factor
authentication এ ক্লিক করুন।
★ এখানে আপনি তিনটি
পদ্ধতি দেখতে পারবেন টু স্টেপ ভেরিফিকেশনের জন্য, সেগুলোর মধ্যে আপনি Text Message
(sms) টি সিলেক্ট করবেন এবং তারপর continue তে ক্লিক করুন।
★ আপনার একাউন্টে
যদি আগে থেকে আপনার ফোন নাম্বার দেওয়া থাকে তাহলে সেটা সেখানে দেখাবে আর যদি না দেওয়া
থাকে তাহলে সেখানে আপনার ফোন নাম্বার দিতে হবে এবং continue তে ক্লিক করতে হবে।
★ এখন আপনার ফোনে
৬ ডিজিটের একটি কোড নাম্বার যাবে এটা আপনাকে Enter the 6-digit code এ লিখতে হবে।
★ তারপর আপনার ফেসবুক
পাসওয়ার্ড দিলেই চালু হয়ে যাবে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন সিস্টেমটি।
প্রাইভেসি ব্যাকআপ টুল ব্যবহার করুন :
এটা আপনি সেটিংসের প্রাইভেসি অপশনে পাবেন। সেখানে Who can my stuff? এই
অপশনটি আপনার পছন্দমত বেছে নিন। তবে এক্ষেত্রে আপনার একাউন্টের নিরাপত্তার জন্য
Public অপশনের চেয়ে Friends অপশন বেছে নেওয়াই ভাল।
অজানা লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন :
আপনারা কখনোই কোন অজানা বা অপরিচিত লিংকে ক্লিক করবেন না। ওখানে ইমেইল বা মোবাইল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন এ ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার পাসওয়ার্ড চলে যাবে হ্যাকারদের হাতে। সুতরাং ফেসবুক একাউন্ট সুরক্ষিত রাখতে অজানা লিংকে ভিজিট করা থেকে বিরত থাকুন।
অপরিচিতদের বন্ধু তালিকায় না রাখুন :
ফেসবুকে আমরা আমাদের নিজেদের বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করে থাকি। অনেক সময় আমরা
অনেক অপরিচিত ব্যক্তিদের ফ্রেন্ডলিস্টে যুক্ত করি। এতে আমাদের একাউন্ট নিরাপত্তাহীনতাই
থাকে। কেননা এই অপরিচিতদের মধ্যে যে কেউ হ্যাকার হতে পারে। তাই অপরিচিতদপর বন্ধু বানানো
থেকে দূরে থাকুন।
লগইন ইনফরমেশন হাইডে (লুকিয়ে) রাখুন :
যেকোনো সেনসিটিভ ইনফরমেশন যেমন-আপনার ফোন নাম্বার, ইমেইল এড্রেস, লোকেশন
ইত্যাদি যেগুলো দিয়ে আপনার ফেসবুক একাউন্ট খোলা আছে সেগুলো প্রাইভেসি দিয়ে হাইড করে
রাখুন, যেন হ্যাকাররা আপনার একাউন্ট সহজে হ্যাক করতে না পারে।
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আশা করি উপরের এই ৬ টি উপায় মেনে চললে আপনি আপনার
ফেসবুক একাউন্ট নিশ্চিন্তে নিরাপদে রাখতে পারবেন। আজকে আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো
লেগে থাকে তাহলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার দিয়ে আমাদের পাশেই থাকুন। সবাইকে ধন্যবাদ।
আর্টিকেল রাইটার - প্রিয়াঙ্কা কুন্ডু