কিসমিস এর জাদুকরী গুনাগুন ও সঠিক ভাবে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানুন-
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আমরা সবাই জানি আঙ্গুর ফল শুকিয়ে বানানো হয় কিসমিস। আর এই কিসমিস আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কারণ এতে যথেষ্ট পুষ্টিগুণ রয়েছে। এটি শরীরে যেমন শক্তি যোগায় তেমনই রক্ত উৎপাদনেও সহায়তা করে। এমনকি কিসমিস ভেজানো পানিও আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তাই বন্ধুরা, আজ আমরা কিসমিসের কয়েকটি জাদুকরী গুনাগুনের কথা আপনাদের জানাতে চেষ্টা করব। যা জানলে আপনারা সত্যিই অবাক হবেন। তাহলে চলুন জানাযাক কিসমিসের জাদুকরি গুনাগুন -
কিসমিসের পুষ্টি উপাদান :
পুষ্টিবিদদের মতে, ১০০ গ্রাম কিসমিসে আছে প্রোটিন ১.৮ গ্রাম, এনার্জি ৩০৪
কিলো ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ৭৪.৬ গ্রাম (যা অধিকাংশই Fructose), ডায়েটরি ফাইবার
১.১ গ্রাম, ফ্যাট ০.৩ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৮৭ মিলিগ্রাম, আয়রন ৭.৭ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম
৭৮ মিলিগ্রাম ও সোডিয়াম ২০.৪ মিলিগ্রাম। এছাড়া কিসমিসে আছে ভিটামিন সি, কে বি২,বি৬
এবং রয়েছে বিভিন্ন রকমের অ্যামাইনো এসিড, ওমেগা ও ফাটি এসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
আরো পড়ুনঃ জেনে নিন খালি পেটে মেথি খাওয়ার উপকারিতা
কিসমিসের গুনাগুন :
রক্তস্বল্পতা কমায় - রক্তস্বল্পতা কমাতে কিসমিস যথেষ্ট উপকারী। এতে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণ আয়রন, পটাশিয়াম, মিনারেল এবং ক্যালসিয়াম যা আমাদের রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি
কমায়। এছাড়া কিসমিসে থাকা তামা লাল রক্তকণিকা গঠনে সহায়তা করে এবং এতে থাকা কপার
লোহিত রক্ত কণিকা তৈরিতেও ভূমিকা রাখে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় - কিসমিস অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা আমাদের
শরীরে ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রামনের বিরুদ্ধে লড়তে সহায়তা করে। এছাড়া এতে
থাকা ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী বৈশিষ্ট্যের জন্য
পরিচিত।
আরো পড়ুনঃ জেনে নিন গ্রিন টির উপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে - কিসমিসে থাকা ক্যাটাচিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
দেহে ক্যান্সারের কোষ উৎপন্নের জন্য দায়ী ফ্রি র্যাডিকেলের বিপক্ষে কাজ করে। যার
ফলে ক্যান্সারের কোষ তৈরি হতে বা আকারে বৃদ্ধি পেতে বাঁধা প্রাপ্ত হয়। এছাড়া এতে
থাকা ডায়েটরি ফাইবার রেক্টাল ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে - উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকরী
প্রাকৃতিক উপাদান গুলোর মধ্যে একটি হল কিসমিস। এর মধ্যে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ
বশে রাখে।
হাড়ের স্বাস্থ্য বর্ধন করে - কিসমিসে থাকা ক্যালসিয়াম আমাদের হাড় ও দাঁতের
জন্য খুব উপকারী। এছাড়া বোরন নামক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টও কিসমিসে থাকে যা সঠিকভাবে
হাড় গঠন হতে সাহায্য করে এবং ক্যালসিয়ামকে তাড়াতাড়ি শুষে নিতে শরীরকে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ জেনে নিন রসুনের পুষ্টিগুণ , উপকারিতা ও অপকারিতা
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে - কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটরি ফাইবার যা আমাদের পরিপাকক্রিয়া দ্রুত হতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।
শরীরের দুর্বলতা দূর করে - শরীরের দুর্বলতা দূর করতে কিসমিসের জুড়ি নেই।
এতে রয়েছে চিনি,গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ যা তাৎক্ষণিকভাবে দেহে এনার্জি সরবরাহ করে থাকে।
দেহে শক্তি সরবরাহ করতে কিসমিসের অবদান অনেক বেশি।
ঘুমের জন্য উপকারী - ভালো ঘুমের জন্য কিসমিস জাদুকরি ভূমিকা রাখে। এতে যে
আয়রন রয়েছে তা আমাদের ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় ও চুলের যত্নে অ্যালোভেরা জেল
ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখে - কিসমিসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি,
জিংক এর সম্মিলিত ক্রিয়া তোকে সুস্থ ও সুন্দর রাখে।
কোলেস্ট্রলের মাত্রা কমায় - কিসমিস দ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধ, এটি কার্যকর
ভাবে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।
কিসমিস খাওয়ার সঠিক নিয়ম :
কিসমিসের পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণভাবে পেতে চাইলে কিসমিস ভিজিয়ে খেতে হবে। রাতে
দুই কাপ পানিতে কয়েকটি কিসমিস রেখে দিন। কিসমিস যত গারো রংয়ের হবে তত উপকারী। পরের
দিন সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো পানি পান করুন। চাইলে এই পানি গরম করেও পান করতে
পারেন।
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, কিসমিস আমাদের অতুলনীয় স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান
করে। তাই বন্ধুরা, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা কিসমিস রাখুন এবং সুস্থ থাকুন। সবাইকে ধন্যবাদ।
আর্টিকেল রাইটার - প্রিয়াঙ্কা কুন্ডু