এই শীতে নিন চুলের বিশেষ যত্নঃ

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, দেখতে দেখতে শীত এসেই গেল। শীতের এই মৌসুমে বাতাসের আদ্রতা কমে যায় আর বেড়ে যায় ধুলাবালি প্রকোপ। যার ফলে ত্বকের পাশাপাশি চুলও হয়ে যায় রুক্ষ-শুষ্ক ও প্রাণহীন। দেখা দেয় খুশকির সমস্যা। চুল পড়ার পরিমাণও বেড়ে যায় এই সময়। তাই শীতে প্রতিদিন চুলের যত্ন নেওয়াটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। চলুন বন্ধুরা, আজ আমরা জেনে নেই এই শীতে কিভাবে চুলের বিশেষ যত্ন নেওয়া যায়

dry

শীতের আবহাওয়ার পরিবর্তনের জন্য চুল তার প্রাকৃতিক আদ্রতা হারিয়ে রুক্ষ-শুষ্ক হয়ে ওঠে। তবে সঠিক যত্নের মাধ্যমে আমরা শীতকালেও চুলের সৌন্দর্য বজায় রাখতে পারি। আসুন জেনে নেই এই শীতে কিভাবে চুল ঝলমলে ও প্রাণবন্ত রাখা যায় -

নিয়মিত চুল ধুতে হবে :

শীতে গোসল করাটা যেন অনেকের কাছেই একটি ভয়ংকর বিষয়। গরম পানি দিয়ে কোনরকম শরীর পরিষ্কার করলেও অনেকে গোসলের সময় চুল ভেজায় না। এতে তাদের স্ক্যাল্প অপরিষ্কার থেকে যায়। তাই এটি একেবারেই করা উচিত নয়। শীতে রোজ চুল পরিষ্কার না করলেও সপ্তাহে অন্তত ২-৩ দিন চুল পরিষ্কার করা জরুরী। তবে মোটেও গরম পানি দিয়ে নয় বরং স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে চুল পরিষ্কার করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ শীতকালে ত্বকের যত্নের অসাধারণ কিছু ঘরোয়া টিপস

চুল কন্ডিশনিং করতে হবে :

শীতে চুলে শুধু শ্যাম্পু করলেই যে চুলের যত্ন হয়ে গেল তা কিন্তু নয়।শ্যাম্পু করার পর আপনাকে অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। এতে আপনার চুল হবে নরম, কোমল ও ঝলমলে।তবে এক্ষেত্রে ঘরোয়া উপায়ে তৈরি কন্ডিশনার ব্যবহার করা বেশি উপকারী। ঘরোয়া কন্ডিশনার হিসেবে ভাতের মাড় ব্যবহার করতে পারেন। ভাতের মাড়ে থাকা স্টার্চ এবং অ্যামিনো এসিড রুক্ষ শুষ্ক চুল নরম করে। এজন্য ভাতের মাড়ে খানিকটা জল মিশিয়ে পাতলা করে নিন এবং শ্যাম্পু করার পর চুলে দিয়ে ৩-৪ মিনিট রেখে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার চুলের গোড়া মজবুতও হবে এবং চুল চকচকেও হবে। 

নিয়ম করে চুলে তেল মালিশ করুন :

শীতে চুলের রুক্ষতা কমাতে সপ্তাহে অন্তত ২-৩ দিন চুলে তেল মালিশ করতে হবে। এক্ষেত্রে নারকেল তেল বা আমন্ড অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। তবে ব্যবহারের পূর্বে তেলটি সামান্য গরম করে নিন এবং এরপর আপনার স্ক্যাল্পে ও পুরো চুলে ভালোভাবে মালিশ করুন। এতে চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে উজ্জ্বল।

আরো পড়ুনঃ শীতকালে আপনার ছোট্ট সোনামণির নিন বিশেষ যত্ন

চুল খুশকি মুক্ত রাখুন :

শীতের শুষ্ক মৌসুমে আমাদের খুশকির সমস্যা বেড়ে যায়। আর এই সমস্যা দূর করতে প্রাকৃতিক উপায় ব্যবহার করা ভালো। কারণ রাসায়নিক উপাদান মাথার স্ক্যাল্পের ক্ষতি করতে পারে। খুশকি সমস্যা দূর করতে নারিকেল তেল ও লেবুর রস খুব ভালো কাজ করে। এজন্য ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল ও সমপরিমাণ লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে মাথার স্ক্যাল্পে মালিশ করুন। এরপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

শীতে ঘরোয়া হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন :

দই, অ্যালোভেরা জেল ও মধু দিয়ে হেয়ার প্যাক - দই ও অ্যালোভেরা জেল চুলের শুষ্কতা দূর করতে বেশ কার্যকরী। তাই দই এর সাথে অ্যালোভেরা জেল এবং ২ চামচ মধু যোগ করে চুলে লাগাতে হবে গোসলের ১০-১৫ মিনিট আগে। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন চুল কত মসৃণ ও চকচকে হয়ে ওঠে।

নারকেল তেল, পাকা কলা ও মধু দিয়ে হেয়ার প্যাক - নারকেল তেলের সাথে মধু ও পাকা কলা একসাথে মিশিয়ে চুলে লাগান। এরপর ২০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের ঝলমলে ভাব নিজেই বুঝতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ শীতে ঠোঁট ফাটা রোধে জেনে নিন কিছু ঘরোয়া টোটকা

ডিম,অলিভ অয়েল, ভিনেগার ও মধু দিয়ে হেয়ার প্যাক - ১ টি ডিমের কুসুম, ১ টেবিল চামচ ভিনিগার, ২ টেবিল চামচ মধু ও ৩ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে সম্পূর্ণ চুলের লাগান এবং ১৫-২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আমাদের আজকে আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। সবাইকে ধন্যবাদ।

আর্টিকেল রাইটার - প্রিয়াঙ্কা কুন্ডু

 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url