জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহে কৃমি সম্পর্কে জানুন (কৃমির লক্ষণ,প্রতিকার ও প্রতিরোধ)

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, জানেন কি? সারা দেশব্যাপী চলছে, দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ২৮ তম জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ। ৮ই অক্টোবর থেকে ১৪ই ২০২৩ পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। প্রতিবছর সরকার কোমলমতি শিশুদের সুস্থতার কথা বিবেচনা করে এই ধরনের প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়ে থাকেন। বন্ধুরা, কৃমি মানুষের শরীরের একটি ক্ষতিকর পরজীবী। শুধু ছোটরা নয়, আমরা বড়রাও কৃমির সমস্যায় ভুগতে পারি। যদিও আমরা অনেকেই সেটা বুঝতে পারিনা। তাই আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহের কৃমি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করব। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক - 

krimi spotaho

পেট ব্যাথা হলেই আমরা সাধারণত ভাবি গ্যাসের সমস্যা। কিন্তু পেট ব্যথা যে কৃমির কারণেও হতে পারে সে কথা আমাদের মাথাতেই আসে না। তবে শুধু পেট ব্যথা নয়কৃমির সমস্যা বোঝার আরো কিছু লক্ষণ রয়েছে। আজ আমরা আপনাদের জানাবো কৃমি কি? কৃমি হওয়ার লক্ষণ এবং কৃমি দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় ও এর প্রতিকার -

আরো পড়ুনঃ জানেন কি আপনার শরীরে ভিটামিনের অভাব হলে কি কি লক্ষণ দেখা দেবে

কৃমি কি :

কৃমি হল ক্ষতিকর পরজীবী প্রাণী। এরা সাধারণত মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর অন্ত্রে বাস করে শরীর থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে বেঁচে থাকে এবং বংশবৃদ্ধি করে। কৃমি দেখতে অনেকটা কেঁচোর মতো। পরিণত অবস্থায় এরা ৬ থেকে ১৪ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। এরা বিভিন্ন রকম হতে পারে, যেমন - গোলকৃমি, সুতা কৃমি, ফিতা কৃমি ও বক্র কৃমি।

কৃমি হওয়ার লক্ষণ :

পেট ব্যাথা হওয়া

শারীরিক দুর্বলতা

ডায়রিয়া ও বমি হওয়া

ওজন কমে যাওয়া

শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দেওয়া

খাবারে অরুচি হওয়া

অকারণে ক্লান্ত অনুভব করা

দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তপাত হওয়া

ঘুমানোর সময় মুখ থেকে লালা পরা

মুখে থুথু ওঠা

শিশুদের ক্ষেত্রে পেট ফুলে যাওয়া

আরো পড়ুনঃ জেনে নিন গ্রিন টির উপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

কৃমি দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় :

অনেকেই ওষুধ খেয়ে কৃমি দূর করেন। তবে আপনারা চাইলে কিছু ঘরোয়া উপায়েও কৃমির সমস্যা দূর করতে পারবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক উপায় গুলো কি কি -

১.কাঁচা হলুদ

কাঁচা হলুদের আছে হাজার উপকারিতা। কাঁচা হলুদ একাধারে জীবাণুনাশক ও প্রদাহ নিবারক। তাই কৃমির সমস্যার সমাধানে কাঁচা হলুদ অত্যন্ত কার্যকরী একটু উপাদান। এজন্য আপনাকে সকালে খালি পেটে এক টুকরো কাঁচা হলুদ চিবিয়ে অথবা রস করে খেতে হবে।

২.লবঙ্গ : 

লবঙ্গে হয়েছে আন্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান যা কৃমি নষ্ট করে। এজন্য এক কাপ পানিতে ৩-৪ টি লবঙ্গ ফুটিয়ে নিয়ে এবং সেই পানি সারাদিন অল্প অল্প করে পান করুন। লবঙ্গ ফুটানো পানি কৃমি সহ কৃমির ডিমও ধ্বংস করে।

৩.কাঁচা রসুন :

কাঁচা রসুন প্রায় ২০ ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং ৬০ ধরনের ফাঙ্গাস মেরে ফেলতে পারে। এতে থাকা অ্যামাইনো এসিড পেটের কৃমি ধ্বংস করে। তাই কৃমি দূর করতে সকালে খালি পেটে ২-৩ কুয়া রসুন খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে কৃমির সমস্যার সমাধান হবে।

আরো পড়ুনঃ জেনে নিন অতিরিক্ত ওজন কমানোর সহজ কিছু উপায়

৪.পেঁপে :

পেটে সমস্যা দূর করতে পেঁপে দুর্দান্ত কার্যকরী একটি উপাদান। তবে যেকোনো ধরনের কৃমি তাড়াতে পেঁপের বীজ শ্রেষ্ঠ। তিনি সমস্যার দ্রুত উপশম পেতে পেঁপে এবং মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। সপ্তাহখানে খেলেই উপকার পাবেন।

৫.মিষ্টি কুমড়োর বীজ :

কৃমির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে খেতে পারেন কুমড়োর বীজ। এজন্য কয়েকটি কুমড়োর বীজ হালকা করে ভেজে গুঁড়ো করে নিন। এবার সমপরিমাণ পানি ও নারিকেলের দুধ একসাথে মিশিয়ে তাতে ১ চা চামচ গুড় করা কুমড়োর বীজ মিশিয়ে নিন। এই পানীয়টি সকালে খালি পেটে পান করুন। দেখবেন এক সপ্তাহে আপনার কৃমির সমস্যা দূর হবেই।

৬.নিম পাতা :

আমরা সবাই জানি, যে কোন ধরনের জীবাণু দূর করতে নিম পাতা খুবই উপকারী। তেমনি কৃমি দূর করতেও হয়েছে এর জুড়ি মেলা ভার। এজন্য সকালে খালি পেটে নিম পাতার রস অথবা নিম পাতা বাটা এক গ্লাস উষ্ণ পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে কৃমি নির্মূল হয়ে যাবে।

৭.শশার বীজ :

ফিতা কৃমি ধ্বংস করতে শশার বীজ সর্বশ্রেষ্ঠ। এজন্য শশার বীজকে শুকিয়ে গুড়ো করে প্রতিদিন এক চামচ করে খেলে দ্রুত ফল পাওয়া সম্ভব।

আরো পড়ুনঃ শীতে ঠোঁট ফাটা রোধে জেনে নিন কিছু ঘরোয়া টোটকা

কৃমি প্রতিরোধের উপায় :

খাবার খাওয়ার আগে হাত সাবান দিয়ে ভালোভাবে ধুতে হবে।

বাথরুম ও রান্নাঘর সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে।

যেকোনো রান্না করা খাবার ভালোভাবে সিদ্ধ করে রান্না করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় ও চুলের যত্নে অ্যালোভেরা জেল

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, একাধিক গবেষণায় জানা গিয়েছে যে,প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষের পেটেই কৃমি থাকে। তাই এই কৃমির সমস্যা সমাধানে উপরোক্ত ঘরোয়া উপায়গুলো ফলো করতে পারেন। এতে আপনারা উপকৃত হবেন। আজকের আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।

আর্টিকেল রাইটার - প্রিয়াঙ্কা কুন্ডু


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url