সুপার ফুড্ ওটস্ এর পুষ্টিগুন ও উপকারিতা
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আমরা আপনাদের সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে মাঝে মাঝে বিভিন্ন খাদ্যের উপকারিতা, অপকারিতা, খাদ্যের পুষ্টিগুণ, খাদ্য গ্রহণের নিয়ম ইত্যাদি নিয়ে হাজির হই। কারণ আপনাদের সুস্থতাই আমাদের কাম্য। তাই আজও আমরা একটি খাদ্যের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। সেই খাদ্যটি হলো ' ওটস '। ওটস কে সুপার ফুড বললে ভুল হবে না। কেননা পুষ্টিবিদরা ওটস কে প্রথম শ্রেণীর সকালের নাস্তার মর্যাদা দিয়েছেন। চলুন দেখে নেই ওটস খেলে আমরা কি কি উপকার পেতে পারি -
ওটস হল এক প্রকার খাদ্যশস্য। এটি ধান, গম ও যব জাতীয় উদ্ভিদ শস্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটাই নাকি বিশ্বের সবচেয়ে পুষ্টিকর শস্য।আজ আমরা সুপার ফুড
ওটসের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেব -
আরো পড়ুনঃ জেনে নিন গ্রিন টির উপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
ওটসের পুষ্টিগুণ :
ওটস হলো দারুন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি
খাদ্যশস্য। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, আয়রন,
প্রোটিন ও ভিটামিন বি সহ একগুচ্ছ পুষ্টি উপাদান। ভিটামিন বি
শরীরে কার্বোহাইড্রেট হজমে সাহায্য করে। এছাড়া ওটসে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক, কপার,
ম্যাঙ্গানিজ, থিয়ামিন ইত্যাদি যা অন্যান্য শস্য জাতীয় খাবারের তুলনায় বেশি। আবার ওটসে
আছে উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড অর্থাৎ মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট।
ওটসের উপকারিতা :
ওটসে রয়েছে আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় নানাবিধ পুষ্টি উপাদান। চলুন
জেনে নেই কি কি উপকারিতা আছে এই ওটসে -
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে :
ওটসে রয়েছে বেটা-গ্লুকোন নামক এই ধরনের ফাইবার। যা শরীরে কোলেস্টেরলের
মাত্রা কমাতে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন ৩ গ্রাম ওটস খেলে
তা প্রায় ৮ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক।
আরো পড়ুনঃ জেনে নিন অতিরিক্ত ওজন কমানোর সহজ কিছু উপায়
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে :
রক্তচাপ কমানোর জন্য আমাদের যে ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রয়োজন তা ওটসে পাওয়া যায়। এটি খাওয়ার ক্ষেত্রে সিস্টোলিক
রক্তচাপকে ৭.৫ পয়েন্ট এবং ডায়াস্টলিক রক্তচাপকে ৫.৫ পয়েন্ট কমতে দেখা গেছে। এছাড়া
ওটসে থাকা ম্যাগনেসিয়াম আমাদের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
হার্ট ভালো রাখে :
ওটস খাওয়া হার্টের জন্য খুবই উপকারী। এটা রক্তে থাকা ক্লোটস যা হার্টের
জন্য হুমকি দায়ক তা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই ওটস খেলে হার্ট অ্যাটাক -এর
ঝুঁকি অনেক কমে যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে:
রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই খাদ্যশস্যের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
লো ক্যালোরি ও সুগার ফ্রি হওয়ায় ডায়াবেটিসের রোগীরা নির্ভয়ে খেতে পারেন ওটস।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের সঠিক খাদ্যাভ্যাস
ওজন কমাতে সহায়ক :
অন্যান্য খাদ্যশস্যের তুলনায় ওটসে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি তুলনামূলক
ধীরে হজম হয়। এজন্য আমাদের দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে এবং চট করে খিদে পায় না। ফলে
এতে দেহের ওজন কমে। তাই ওজন কমাতে চাইলে প্রতিদিন খেতে পারেন ওটস।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় :
ওটসে থাকা শক্তিশালী ফাইবার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ।
ফলে দেহ নানাবিধ রোগ থেকে মুক্ত থাকে সহজেই।
হজমে সাহায্য করে :
হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও হয়েছে ওটসের জুড়ি মেলা ভার। এতে থাকা ফাইবার আমাদের
হজমের সমস্যা বা কোষ্টকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। তাই যারা হজমের সমস্যায় ভুগছেন
তারা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন ওটস।
আরো পড়ুনঃ প্রতিদিন বাদাম খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়
কোলন ও স্তন্য ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক :
ওটসে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট কোলন ও স্তন্য ক্যান্সার
প্রতিরোধে সহায়তা করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন এক বাটি করে ওটস খেলে নারীদের প্রায়
৪১ শতাংশ পর্যন্ত স্তন্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, ওটস একটি উপকারী খাদ্য। তাই যারা স্বাস্থ্য সচেতন
তারা তাদের সকলের নাস্তা হিসেবে গ্রহণ করে ওটস।আপনিও আপনার সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা
করে এটি খেতে পারেন নিয়মিত। আজ এ পর্যন্তই আবারো আমরা হাজির হবো অন্য কোন হেলথ টিপস
নিয়ে। সবাইকে ধন্যবাদ।
আর্টিকেল রাইটার- প্রিয়াঙ্কা কুন্ডু