শীতকালে আপনার ছোট্ট সোনামণির নিন বিশেষ যত্ন -
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, ঋতুচক্রের পালাবদলে প্রকৃতিতে আসতে চলেছে শীতকাল। তীব্র গরমের পরে শীতকাল যেন আমাদের সবারই কাম্য। তবে দুশ্চিন্তার বিষয় হলো এই সময় কোমলমতি শিশুরা খুব অল্পতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারা আবহাওয়ার দ্রুত তারতম্যের সঙ্গে অনেক সময়ই মানিয়ে নিতে পারেনা। আর এজন্য এই সময় শিশুদের জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা সহ নিউমোনিয়ায় পর্যন্ত ভুগতে দেখা যায়। তাই শীতের শুরুতেই আমাদের ছোট সোনামনিদের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা জরুরী। বন্ধুরা, আজ আমরা আপনাদের জানাবো কিভাবে এই শীতে আপনারা আপনাদের ছোট্ট সোনামণিদের যত্নে রাখবেন।
★ শীতে শিশুদের উষ্ণ ও নিরাপদ রাখতে সবচেয়ে
বেশি প্রয়োজন গরম পোশাক। আর সেটা হতে হবে অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। তবে না বুঝে
সোনামণিদের অস্বস্তিকর গরম পোশাক পারবেন না। শীতের তীব্রতা বুঝে তাদের নরম ও আরামদায়ক
গরম পোশাক পড়াতে হবে।
আরো পড়ুনঃ শীতে ঠোঁট ফাটা রোধে জেনে নিন কিছু ঘরোয়া টোটকা
★ শীতকালে দেখা যায়
বেশির ভাগ অভিভাবকই তাদের ছোট বাবুকে গোসল করাতে চান না। কারণ তাদের জ্বর,সর্দি-কাশি
হবে বলে। কিন্তু এই ধারণা একদমই ভুল। বরং এই সময় শিশুদের হালকা তাপমাত্রার গরম পানি
দিয়ে নিয়মিত গোসল করিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তবে যদি শিশুর ঠান্ডা জনিত
কোন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে পুরো শরীর মুছে দেওয়া
যেতে পারে।
★ শিশুর বয়স এক বছরের
কম হলে তাকে অবশ্যই ব্রেস্ট ফিট করান। কেননা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে
এবং সর্দি-কাশি ও সংক্রমণ থেকে তাদের দূরে রাখতে মাতৃ দুগ্ধের কোন বিকল্প নেই।
★ শীতে আবহাওয়া অনেক
বেশি শুষ্ক থাকে। তাই এই সময় শিশুদের ব্রেস্ট মিল্কের পাশাপাশি তরল জাতীয় খাবার বেশি
করে দেয়া উচিত। দিনে অন্তত দুইবার কুসুম গরম দুধ, বিভিন্ন স্যুপ জাতীয় খাবার ও শীতের
বাহারি সবজি দিয়ে খিচুড়ি তৈরি করে খাওয়াতে হবে। পাশাপাশি শিশুকে দিতে হবে মৌসুমী
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল।
আরো পড়ুনঃ অলৌকিক সজনে পাতার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
★ শীতে ছোট সোনামণিদের
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট সকালের হালকা রোদে রাখার
অভ্যাস করুন।
★ শীতের সময় শিশুদের
ত্বক অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায়। কারণ তাদের ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল। তাই এই সময় শিশুর ত্বক নরম ও কোমর রাখতে শিশুদের মুখে এবং সারা শরীরে বেবি লোশন, বেবি অয়েল, গ্লিসারিন
ইত্যাদি ব্যবহার করুন।
★ শিশুদের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা কম থাকে। তাই তাদের সহজেই জ্বর, সর্দি-কাশি লেগে যায়। আর এজন্য শীতে শিশুদের
অপ্রয়োজনে ঘরের বাহিরে না নিয়ে যাওয়াই ভালো।
আরো পড়ুনঃ চুলের যত্নে জবা ফুলের কেরামতি জেনে নিন ২০২৩
★ শীতের বেশির ভাগ
সময় আমরা আমাদের ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করে রাখি, যাতে ঘরে ঠান্ডা বাতাস না ঢোকে। আর
এর ফলে আলো বাতাসের অভাবে আমাদের অজান্তেই ঘরে জীবাণুর সংক্রমণ বাড়তে থাকে। তাই শিশুকে
জীবাণুর সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে সূর্যের আলো ঘরে প্রবেশ করা পর্যন্ত দরজা জানালা কিছু
সময়ের জন্য খুলে রাখুন।
★ যেসব ছোট বাবুরা
হামাগুড়ি দেওয়া শিখেছে, তারা যাতে শীতে ঠান্ডা মেঝেতে হামাগুড়ি না দেয় সেদিকে বিশেষ
খেয়াল রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে মেঝেতে সবসময় মাদুর বা ম্যাট ব্যবহার করা ভালো।
★ ছোট বাবুদের রাতে
অবশ্যই ডায়াপার পরিয়ে শুয়ানো ভালো। তবে ডায়াপার ছয় ঘন্টার বেশি কোনভাবেই রাখা যাবেনা।
ডায়াপার থেকে র্যাশ হতে পারে। তাই আগে থেকে ভেসলিন বা জিংক সমৃদ্ধ ক্রিম লাগিয়ে
দিন।
আরো পড়ুনঃ ড্রাগন ফল কি সত্যিই উপকারী
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, প্রতিবছরই ঋতু পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে শীতকাল আসবে-যাবে।
তাই আমরা চাইলেও শিশুদের ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে দূরে রাখতে পারবো না। তবে উপরের নিয়মগুলো
মেনে চললেই আমরা ছোট সোনামনিদের শীতকালেও সুস্থ ও সুরক্ষিত রাখতে পারব। আপনার ও আপনার
ছোট সোনামনির সুস্থতা কামনা করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। সবাইকে ধন্যবাদ।
আর্টিকেল রাইটার - প্রিয়াঙ্কা কুন্ডু