অতিরিক্ত ওজন কমানোর কিছু সহজ উপায় সম্পর্কে জানুন

 

স্বাস্থ্যই সম্পদ -  এ কথাটা আমরা অনেকেই ভুল ভাবে গ্রহণ করে থাকি।  আমরা অনেকেই ভাবি স্বাস্থ্য বলতে মোটা শরীর বা অতিরিক্ত ওজন থাকা। আর মোটা মানে সুস্থ থাকা। আসলেই কি তাই?  না বন্ধুরা, আসলে তা নয়। অতিরিক্ত ওজন আমাদের বিভিন্ন অসুখের হাতছানি দেয়।তাই নিজেকে স্নিম রাখাটা যেমন জরুরী সুস্থ থাকার জন্য তেমনই জরুরী নিজেকে সবার কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য। কেননা সুন্দর চেহারা সাথে সুন্দর ফিগার থাকলে তবেই না সুন্দরী বা সুন্দরের খ্যাতি পাওয়া যাবে। অল্প বয়সী ছেলে মেয়েদের কাছে ওজন বাড়াটা অভিশাপের মতো দাঁড়িয়েছে। তবে আমাদের মাঝে অনেককেই দেখা যায় তারা অনেক রকম ডায়েট ফলো করার পরেও নিজেদের অতিরিক্ত ওজন কমাতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই তাদের বাড়তি ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তা দূর করতে আমাদের আজকের আয়োজন। কেননা আজকে আমরা আপনাদের জানাবো কিভাবে খুব সহজে নিজের বাড়তি ওজন কমিয়ে নিজেকে সুদর্শন করে তোলা যায়। 


শরীরে বাড়তি ওজন আপনার সৌন্দর্য ম্লান করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তাই অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলার জন্য কিছু উপায় অবলম্বন করতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ওজন কমানোর কিছু উপায়-

নিয়মিত গরম পানি পান করতে হবে :

ওজন কমাতে সকালে খালি পেটে লেবু, মধু ও গরম পানির উপকারিতার কথা আমরা অনেকেই জানি। তবে শুধু গরম পানি পান করলেও ওজন কমানো সম্ভব একথা অনেকেরই অজানা। গরম পানি শরীরের টক্সিন দূর করতে সহায়তা করে। তাছাড়া গরম পানি পেটের অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতেও সাহায্য করে। 

আরো পড়ুনঃ জেনে নিন রসুনের পুষ্টিগুণ , উপকারিতা ও অপকারিতা

খাদ্য তালিকায় প্রোটিন জাতীয়  খাবার রাখতে হবে:

গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহনে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং তা পেটের মেদ জমতে দেয় না। খাবারে যদি ২৫ ভাগ প্রোটিন থাকে তবে প্রোটিন মস্তিষ্কে খাবারের চিন্তা ৬০ ভাগ কমিয়ে দেয় ও রাতের গভীরে বা ভোররাতে খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বা প্রবণতা ৫০ ভাগ কমিয়ে দেয়। তাই ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখতে হবে।

কার্বোহাইড্রেট কম খেতে হবে :

আমাদের প্রতিদিন এর খাদ্য তালিকার একটি বড় অংশ জুড়ে আছে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা  জাতীয় খাবার। যা গ্রহণ করলে সহজেই হজম হয়ে যায় এবং ঘনঘন ক্ষুধা পায়। এছাড়া শর্করা জাতীয় খাবারের প্রচুর ক্যালরি থাকে, যা দ্রুত ওজন বাড়িয়ে দেয়। তাই শর্করা জাতীয় খাবার, যেমন - ভাত, রুটি, আলু, চিনি, মিষ্টি, মধু ইত্যাদি কম খেতে হবে।  গবেষণায় এটা প্রমাণিত যে কম ক্যালরিযুক্ত খাবার ও কম চর্বিযুক্ত খাবার ওজন কমাতে ২ থেকে ৩ গুণ অধিক কার্যকর। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কম ক্যালরি যুক্ত খাবার রাখতে হবে। 

আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় ও চুলের যত্নে অ্যালোভেরা জেল

ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে :

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আপনাকে ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার রাখতে হবে। কেননা ফাইবার যুক্ত খাবার সহজে হজম হয় না। ফলে পাকস্থলীতে দীর্ঘ সময় ধরে থাকে এবং ক্ষুধা বোধ কম হয়। আর তাই প্রতিদিন নূন্যতম ৪০ গ্রাম অথবা তার বেশি পরিমাণে ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত। ফাইবার যুক্ত খাবার, যেমন - ওটমিল, মটরশুঁটি, লালা আটার রুটি, ডাল, শিম, বার্লি, গাজর, কমলা, আপেল, কলা ইত্যাদিতে বেশি  পরিমাণে ফাইবার রয়েছে।

নিয়মিত ব্যায়াম করতে ও হাঁটতে হবে :

দ্রুত ওজন কমানোর সবচেয়ে ভালো ও গুরুত্বপূর্ণ উপায় হচ্ছে ব্যায়াম ও হাঁটা। ব্যায়াম আমাদের শরীরকে যেমন ফিট রাখে ঠিক তেমনি আমাদের ওজন কমাতেও সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন কম করে হলেও ৩০ মিনিট ব্যায়াম ও ৩০ মিনিট হাঁটতে হবে।খাবার গ্রহণের পরে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাঁটলে শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায় এবং সেই সঙ্গে খাবারের ফলে বাড়তি মেদ শরীরে জমতে পারে না এছাড়া ওজন কমানোর জন্য সাঁতার কাটা ও সাইকেল চালানো আদর্শ ব্যায়াম। 

আরো পড়ুনঃ প্রাকৃতিক মহাঔষধ কালোজিরার উপকারিতা ও অপকারিতা
 

পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে :

ওজন কমাতে হলে বা সুস্থ থাকতে গেলে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। রাতে ঘুমানোর সবচেয়ে উত্তম সময় ৯ টা থেকে ১০ টা এবং সকালে ঘুম থেকে ওঠার উত্তম সময় ৫ টা থেকে ৬ টা। কেননা এই সময় গুলোতে আমাদের শরীরে মেটাবলিজম উৎপন্ন হয়। আর মেটাবলিজম আমাদের শরীরের মেদ কমাতে  সাহায্য করে।

কোমল পানীয় বর্জন করতে হবে :

সোডা, ফলের রস, চকলেট মিল্ক ও অন্যান্য কোমল পানীয় যেমন - কোকাকোলা, ফান্টা, পেপসি, সেভেন আপ ইত্যাদি অতিরিক্ত চিনি যুক্ত পানীয় বর্জন করতে হবে। কারণ চিনির মাধ্যমে আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি প্রবেশ করে ও তা আমাদের ওজন বাড়ায়। 

 আরো পড়ুনঃ ড্রাগন ফল কি সত্যিই উপকারী

ওজন কমানোর অন্যান্য উপায় :

ওজন কমানোর জন্য উপরের উল্লেখিত উপায় গুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এছাড়া অতিরিক্ত খাবার পরিহার করা, সুষম খাবার গ্রহণ করা, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা না করা, রাতে তাড়াতাড়ি খাবার খাওয়া, খাবার খাওয়ার আগে পানি পান করা, চিনি যুক্ত খাবার পরিহার করা, গ্রিন টি পান করা, বেশি বেশি সালাদ খাওয়া, বেশি বেশি পানি পান করা, সময় মেনে খাবার গ্রহণ করা, প্রতিদিন ফল খাওয়া ইত্যাদি উপায়গুলো মেনে চললে আপনার ওজন কমতে বাধ্য।

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, অতিরিক্ত ওজন আমাদের কারো জন্যই ভালো না। এজন্য আমরা সবাই নিজেদের ফিট রাখার চেষ্টা করব। সবার সুস্থতা কামনা করে শেষ করছি আমাদের আজকের আয়োজন , সবাইকে ধন্যবাদ। 

আর্টিকেল রাইটারঃ প্রিয়াংকা কুণ্ডু

 

 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url