অমনোযোগী বাচ্চাদের পড়ায় মনোযোগী করে তোলার কিছু উপায় জেনে নিন

 

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, বর্তমান সময়ে নিজের সন্তানের পড়াশোনা নিয়ে প্রত্যেক মা-বাবার যেন চিন্তার শেষ নেই। কিন্তু এই ডিজিটাল যুগের বাচ্চারা মা-বাবার চিন্তার তোয়াক্কা না করে তারা বেশি ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করে মোবাইল, ল্যাপটপ ও বিভিন্ন গেমস খেলা নিয়ে। পড়াশোনায় তাদের মন বসে না বললেই চলে। বই পড়া, মুখস্ত করা, লেখা এগুলো যেন তাদের কাছে পানশে লাগে। কিন্তু মা বাবা হয়ে তো আর আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারিনা। আমাদেরকেই চেষ্টা করতে হবে কিভাবে বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করে তোলা যায়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করে তোলা যায়-


বন্ধুরা বাচ্চা মানেই কোমলমতি। ওদের যে কোন জিনিস বোঝাতে হবে কোমল সুরে ও মিষ্টি ব্যবহারে। পড়াশোনা কঠিন, বেশি বেশি পড়তে হবে, বেশি বেশি লিখতে হবে, কেন পড়া মুখস্ত হচ্ছে না, কেন তুমি পারছ না - এ ধরনের আচরণ কখনোই বাচ্চাদের সাথে করা যাবে না। তাহলে বন্ধুরা আসুন আমরা জেনে নেই বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করে তোলার কিছু সহজ উপায় 

বাচ্চার পড়ার রুটিন তৈরি করুন :

আমাদের জীবনে রুটিন জিনিসটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তেমনি বাচ্চাদের জন্যও একটি সঠিক রুটিন থাকাটা জরুরী। বাচ্চারা প্রতিদিন কোন কোন সময়ে পড়বে,কোন সময় খেলাধুলা করবে, দিনের কোন সময় তারা ঘুমাবে, সকালে কোন কোন বিষয় গুলো পড়বে,রাতে কোন কোন বিষয়গুলো করবে ইত্যাদি এসব কিছু রুটিনে লিখে রাখতে হবে। তবে রুটিন কি অবশ্যই বাচ্চাকে সাথে নিয়ে করতে হবে। যাতে রুটিনটি তার মনের মত হয়। তাহলেই দেখবেন বাচ্চারা রুটিনে থাকা বিষয়গুলো আনন্দের সাথে করতে শুরু করবে।

বাচ্চাকে আনন্দ করে পড়ান :

দেখা যায় বাচ্চারা সব সময় সবকিছুর মধ্যে মজা বা আনন্দ খুঁজে বেড়ায়। আর তারা যে কাজের মধ্যে আনন্দ পায় সেই কাজ করতেই বেশি আগ্রহী হয়। তাই পড়াশোনা কঠিন এটা তাদের বুঝতে না দিয়ে তাদেরকে আনন্দ করে বা মজার ছলে পড়াতে হবে। দেখবেন বাচ্চারা মজা করার আদলে পড়ার কাজটি সারবে।এক্ষেত্রে কিন্তু আপনার আচরণই আসল ভূমিকা পালন করবে।

আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের মোবাইল ফোনের আসক্তি কমানোর কিছু উপায়

বাচ্চার প্রশংসা করুন :

কাজে প্রশংসা পেলে আমরা কেনা খুশি হই। তেমনি আপনি যদি আপনার সন্তানের পড়াশোনার প্রশংসা করেন তাহলে তার পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বুহুগুন বেড়ে যাবে। তাই বাচ্চাদের সামান্য উন্নতিতে প্রশংসা করুন, তাদের উৎসাহ দিন।

বাচ্চাকে পুরস্কার দিন :

পুরস্কার বা উপহার পেতে আমরা সবাই ভালোবাসি। আর বাচ্চাদের তো কথাই নেই। তারা দুইটা চকলেট পেলেই মহা খুশি। তাই বাচ্চাদের পড়াতে বসানোর আগে তাদের বলুন যে, ভালোভাবে পড়লে আমি তোমাকে পুরস্কার  দেবো। এবার দেখুন বাচ্চারা মহানন্দে পড়া শেষ করবে।

পড়ার সময় মোবাইল ফোন দূরে রাখুন :

অনেক সময় দেখা যায় বাচ্চাদের পড়াতে বসে আমরা বড়রা মোবাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করি। কিন্তু বাচ্চাদের পড়ার সময় এই কাজটি কখনোই করা যাবে না। কেননা এতে করে বাচ্চার মনোযোগ পড়ার দিকে না থেকে মোবাইলের দিকে চলে যায়।

আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার উপায় 

বাচ্চাকে সহজ পড়া দিয়ে শুরু করুন :

আপনার বাচ্চাকে প্রতিদিন সহজ পড়া দিয়ে পড়াশোনা শুরু করুন। এতে সে সহজে ও তাড়াতাড়ি পড়াটা রপ্ত করতে পারবে এবং পড়ার প্রতি তার ভয় কেটে যাবে। তার মনে হবে সে সব পারবে। এরপর আস্তে আস্তে নতুন করা শুরু করুন।

বাচ্চাকে নিয়ে মাঝে মাঝে ঘুরতে যান :

একভাবে পড়াশোনা করতে বাচ্চাদের ভালো লাগেনা। তাদের মধ্যে একঘেয়েমি চলে আসে। তাই মাঝে মাঝে বাচ্চাদের নিয়ে তাদের পছন্দের জায়গায় ঘুরতে যেতে হবে। এতে করে তাদের মন আনন্দে থাকবে এবং পড়াশোনায় মন বসবে।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, শিশু মানেই কোমলমতি। তাদের বকাঝকা না করে আদর করে বোঝাতে হবে যে, জীবনে পড়াশোনা গুরুত্ব কতটা। আশা করি উপরের কৌশল গুলো অনুসরণ করলে আপনার বাচ্চার পড়াশুনার প্রতি মনোযোগ আসবেই আসবে। আপনার ও আপনার পরিবারের শুভকামনা করে আজকের মত শেষ করছি। সবাইকে ধন্যবাদ।

আর্টিকেল রাইটার - প্রিয়াঙ্কা কুণ্ডু


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url